Translate

Tuesday, April 22, 2014

জানাতে যত চাই কথায়, হারায় ততই মানে...


১.
এককথায় বলি, এত সহজ কথায় এত সুন্দর প্রকাশ আমি আর কোনো গানে শুনি নি। সিরিয়াসলি। শুরুটাই অসাধারণ। "ভালো যে বাসি" সেই কথা যতই ভাষায় প্রকাশ করে জানাতে চাই, ঠিক ততই, প্রকাশ করতে করতেই যেন টের পাই যে আসলে মনের ভেতরে যত গভীর ভাব নিয়ে যত গভীর ওজন নিয়ে এই "ভালোবাসি" অনুভূতিটা স্থান নিয়ে ছিলো, ততটা ভাব, ততটা ওজন আর আর থাকছে না। বলে ফেলার পর। আহা! তাহলে কেন বলতে গেলি হতভাগা? কিন্তু বিষয়টা আজীব না? বলার পরে তো এতদিনের আকারহীন, আবছা ইংগিতময় সমস্ত কথা বরং আরো অর্থবহ হয়ে ওঠার কথা। তাই না?


একটু কপচানো হয়ে যাবে, তবু বলি, গোটা কমুনিকেশন প্রসেসকে এখন একদম ভেঙে দেখানো হয়, পড়ানো হয়। একটা প্রকাশতব্য মেসেজ একজনের মনের ভেতরে এনকোডেড হয়ে মানে গঠিত হয়ে তারপর কমিনিকেশন চ্যানেলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। চ্যানেল মানে বাতাস হতে পারে, মোবাইল হতে পারে, কত কিছুই হতে পারে। এমনকী ব্লগ/লেখার পাতাও হতে পারে। সেটি যখন আর একজনের নজরে আসে, বা কানে আসে, বা অনুভূতিতে আসে, তখন, যদি কমুনিকেশন সফল হয়, তাহলে এনকোডার ঠিক যা বোঝাতে চাচ্ছিলো, ঠিক সেইরকমেই ডিকোডেড হবে; এই গানের প্রেক্ষাপটে যদি কথা বলি, তাহলে বলতে হয়, আরো অর্থপূর্ণ হবে। কিন্তু না, কবি বলছেন...

জানাতে যত যাই কথায়, হারায় ততই মানে
ভালবাসি তোমায়, তাই জানাই গানে।

সিম্পল অর্থ হলো, কথার মাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর তা যেন আসলে আরো অর্থ হারালো। অর্থাৎ অর্থপূর্ণ করতে গিয়ে "ভালোবাসি" আরো অর্থা হারালো।

২.
কথার অনেক দুর্নাম হলো। কথা কথার অর্থ আরো গোপন করে দেয়, ইত্যাদি। কিন্তু যে ভুগেছে ভালোবাসার রোগে, তার কাছে তো কথা আর কথা নেই। কথায় প্রকাশিত হবার পর মনে হয়েছে ভেতরে যে বিশাল আকৃতি নিয়ে এই অনুভূতিটি জেগে উঠেছে, তা তো ঠিকমতো প্রকাশিত হতে পারলো না। মনে হয় আরো কিছু বলি। আরো কিছু জানাই। আরো কিছু উজাড় করে দিই। নিজের সবটুকু উজার করে দিই।

কেন এমন যে মনে হয়, কথা শুধুই কথা আর নয়।
যেন উজার করে চায় দিতে আজ যা কিছু প্রানে

ভালবাসি তোমায়, তাই জানাই গানে।
জানাতে যত যাই কথায়, হারায় ততই মানে
ভালবাসি তোমায়, তাই জানাই গানে।

৩.
নাহ! তবু যা বললে মনে হয় সবটুকু বলা হলো, কমিনিকেশন কমপ্লিট হলো, হাজার কথাতেও মনে হয় সেইটুকু বলা হচ্ছে না। তারপর...বলা হয় নি সেই কথা...কিন্তু তাকিয়েছেন আপনি তার দিকে। তার চোখের দিকে। আর আপনি বুঝে গেলেন, আর কিছু বলার দরকার নেই। কারণ যা কিছু বলতে চান, সব তো সে অলরেডি জানে!


কিছুতেই হয়না বলা আর শত কথায়ও, যা বলার,
বুঝি জানাতে চাই সব যারে মোর আপনি সে জানে,
ভালবাসি তোমায়, তাই জানাই গানে।

জানাতে যত যাই কথায়, হারায় ততই মানে
ভালবাসি তোমায়, তাই জানাই গানে।

৪.
অসাধারণ একটা গান!

গায়ক: অরুনেন্দু দাস। অডিও শুনে ভক্ত হয়ে যখন ভিডিও দেখি, হঠাৎ একটা ধাক্কা খাই। আপনারাও খাবেন, সন্দেহ নাই, যদি আগে থেকে অরুনেন্দুকে না চেনেন।

দেখুন:



Monday, April 21, 2014

আমাকে আমার মতো লিখতে দাও, আমি নিজেকে নিজের মতো গুছিয়ে নিয়েছি...

আমাকে আমার মতো লিখতে দাও, আমি নিজেকে নিজের মতো গুছিয়ে নিয়েছি...
---ইউসুফ ইমরান
___________________________________________________________________________

অনেকিন পর লিখছি। জড়তা কাজ করছে। নাম দিয়েছিলাম ব্রেক-দা-ট্রেডিশন। এখন হাসি পাচ্ছে। নিজেই ব্রোকেন হয়ে এতদিন...কী করেছি আসলে আমি? ছদ্মনামে কিছু লিখেছি ঠিক আছে, কিন্তু সত্যিকার অর্থে লেখার মতো কিছুই লিখি নি। স্ত্রীর মুখের মায়ায় কয়েকটা কবিতা লিখেছি, তার মধ্যে কয়েকটা হয়তো খারাপ হয় নি, কিন্তু মোটের উপর, এতদিন, আসলে আমি ঠিক লেখক ছিলাম না।

এই ব্রেক-দা-ট্রেডিশনের কাজ যখন প্রথম শুরু করি, তখন আমি ঢাকা মেইনে। শাহাজালাল ইসলামি ব্যাংক। প্রতিদিন সকালের দুই আড়াই ঘণ্টা প্লাস রাতের ফেরার পথের আড়াই-তিন ঘণ্টা রাস্তা পাড়ি দিয়ে আবদুল্লাপুর-দিলকুশা অফিস করি, আর ফিরে অনলাইনে ছদ্মনামে যুদ্ধ করি। সেই যুদ্ধ খুবই অর্থপূর্ণ। সারাজীবনই অর্থপূর্ণ থাকবে। কিন্তু কবিতা আসলে নতুন কিছু লিখি নি। মানে ধরার মতো, বলার মতো। সেই পুরোনো ভার্সিটি লাইফের গুলোই একটু সংশোধন করে ব্লগে...।

একটু কি নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম? বিয়ে তো করেছি ২০১১-এর ১৬ ডিসেম্বর। কিন্তু বিয়ের আগে বলতে গেলে একা। ঘরে ফিরে খাওয়া দাওয়ার পর, একাই তো। সত্যিকারের কবি হলে একটা বই বের করার মতো অবস্থা হয়ে যেত। ক..ত বিষয় নিয়ে কত গভীর ভাবনা প্রকাশ করেছি বিভিন্ন জায়গায়। প্রকৃত গভীরতা থাকলে আমার চিন্তা ভাবনা মৃত হয়ে যেত না। একটা কিছু হতো। আমি বলছি না বই হয়ে প্রকাশিত হতে হবে; কিন্তু অফ হয়ে যাবে কেন? কত লোক দেখেছি, লেখার প্লট খুঁজে পায় না। একই গত বাঁধা কথা বার্তা নিয়ে রাজ্যের লেখা লিখে ফেলছে। অথচ আমার মাথায় গিজগিজ করতো বিষয়। কী আশ্চর্য! এত বিষয় যার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায় সর্বক্ষণ, তার তো চুপ করে বসে থাকার কথা না!

তাহলে কি হারিয়ে ফেলছিলাম আমি নিজেকে?
এলোমেলো?
এই যে এই বাতাস যেমন অর্থহীন, আকাশের মেঘেরা যেরকম উদ্দেশ্যহীন, আমি কি সেইরকম কিছূ হয়ে গিয়েছি?

ওয়েট! ওয়েট!!
বাতাস অর্থহীন, এইকথা নি:সন্দেহে বলে শুধু এলোমেলো লোকেরাই।
আকাশের মেঘের উদ্দেশ্য জানে না বলেই যে ভাবে এই মেঘ উদ্দেশ্যহীন, সেই তো নিজ থেকে হারিয়ে গিয়েছে।
অর্থ হলো, এই কথা প্রমাণিত হলো, উপমা যেমনই হোক, যার মতো করেই হোক, আমি এলোমেলোই হয়ে আছি কিছুদিন! নিজেকে সত্যিই খুঁজে পাই নি।

কিন্তু, এই কথা আজকে বলি। আশার কথা বলি। এই এলোমেলোত্ব, আত্মহারাত্ব, ইত্যাদির অন্তর্নিহিত গূঢ় রহস্য হয়তো আমি জানি না, কিন্তু এইটুকু জানি, নিজের এলোমেলোত্ব উপলব্ধিকরণটাই হলো নিজেকে গুছানোর প্রাথমিক স্টেপ।

আশা করছি
শীঘ্রই আবার লিখতে শুরু করবো।

আগেরই মতো...